এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ খেলতে তুর্কমেনিস্তানে পৌঁছেই তুমুল সমস্যায় ইস্টবেঙ্গল। দীর্ঘ বিমানযাত্রার পরে ক্লান্ত ফুটবলাররা তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবত পৌঁছেও স্বস্তিতে নেই। রবিবার ভোর তিনটের সময়ে লাল-হলুদ ব্রিগেড আশগাবতে পৌঁছয়। এর পর থেকেই নানা সমস্যায় জেরবার হতে হচ্ছে তাদের।
প্রথমেই তাদের জেরবার হতে হয় বিমানবন্দরে। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও, নানা অজুহাতে ইমিগ্রেশনের জন্য প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে রাখা হয় সবাইকে। সেখান থেকে বের হয়ে ঘণ্টাখানেকের বাস জার্নির পর তারা পৌঁছয় ৩০ কিলোমিটার দূরে আর্কাদাগে। সেখানেই পৌঁছানোর পর থেকে কার্যত বন্দিদশা ইস্টবেঙ্গল ব্রিগেডের।
আরও পড়ুন: বর্ণহীন ফুটবল, গোলের মুখই খুলল না, আর্কাদাগের কাছে ০-১ হারল ইস্টবেঙ্গল
আসলে তুর্কমেনিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের দল আর্কাদাগ। এই আর্কাদাগ শহরটি তাঁর নিয়ন্ত্রণে। এই এলাকাটি কার্যত জনমানবশূন্য। পর্যটকদের প্রবেশের অধিকার নেই। রাস্তায় শুধুই পুলিশ এবং সেনা। ইস্টবেঙ্গল দল হোটেলে ঢোকার পরেই সবার পাসপোর্ট জমা নিয়ে নেওয়া হয়। রাত পর্যন্ত সেগুলি ফেরত দেওয়া হয়নি। পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হোটেলের বাইরে আর্কাদাগের প্রতিনিধি ছাড়া কেউ বের হতে পারবে না।
এখানেই শেষ নয়। খবরানুযায়ী, চূড়ান্ত অব্যবস্থারও শিকার অস্কার ব্রুজোর দল। হোটের রুমে নাকি রুমে সামান্য টুথপেস্ট, ব্রাশ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। খাবারদাবারও ঠিক মতো পায়নি কলকাতার ক্লাব। ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে আগেই ফুটবলারদের সারা দিনের খাবারের তালিকা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও ব্রেকফাস্ট করতে গিয়ে ফুটবলাররা দেখেন, ডায়েট মেনে কোনও খাবার নেই।
আরও পড়ুন: যুবভারতীর বাইরে ধুন্ধুমার, বিক্ষোভ ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের, অস্কারের দাবি, আশা এখনও শেষ হয়নি
বেশিরভাগ ফুটবলারই সেই খাবার খেতে পারেননি। দুপুরে হোটেলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে মোটা চালের ভাত, পাতলা ডাল এবং একটি করে মাছ ভাজা। আগে থেকে বলা সত্ত্বেও ছিল না মাংস বা ডিমের কোনও পদ।
হোটেলে ওয়াইফাই অত্যন্ত স্লো। সেখানে আবার সব সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্লক করে রাখা। ফুটবলাররা যে সামান্য বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলবেন, তাও পারছেন না। অন্য পদ্ধতিতে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ শুধু হোয়াটসঅ্যাপ করতে পারছেন। স্থানীয় সিম চাওয়াতে গোটা দলের জন্য মাত্র চারটি সিম কার্ড বরাদ্দ করা হয়।
আগেই ইস্টবেঙ্গল জানিয়েছিল, ফুটবলাররা বিকেলবেলা হাঁটতে যাবেন। কিন্তু সেখানেও জারি নিষেধাজ্ঞা। অনেকক্ষণ কথা বলার পর জানানো হয়, বিকেল ৪টের সময় একটি বাস আসবে। সেই বাসে চেপে মূল মাঠ দেখতে যাবে দল। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা নির্দিষ্ট সময়ের আগে চলে এলেও, বাস আসে ৪টে ৫০ মিনিটে।
মূল মাঠের অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। গোটা জমি উঁচু-নিচু। কোনও জায়গায় ঘাস বড়, কোথাও ছোট। চোট লাগার সমূহ সম্ভাবনা। বাইরে ছবি তোলার ক্ষেত্রেও জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। সব মিলিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের ম্যাচ খেলতে নামার আগে পারিপার্শ্বিক চাপে বিধ্বস্ত লাল-হলুদ।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।